About: Bengali Translation


অন্তর্বর্তী শ্রম: চক্র, সীমান্ত, অঞ্চল

অন্তর্বর্তী শ্রমের কাজ হচ্ছে ঘুর্ণি হাওয়ার মত এশিয়ার পুঁজিবাদী রূপান্তরে, শ্রম ও তার গতিবিধির পরিবর্তিত প্রবণতাগুলোকে অনুসন্ধান করা। এশিয়া যে বিশ্ব কর্মযজ্ঞের কারখানা, এই ধারনাকে মাথায় রেখে তিনবছর ব্যাপী এই গবেষণা প্রকল্পটি নতুন অর্থ-ব্যবস্থায় সৃষ্টিশীলতা, উদ্ভাবন আর জ্ঞান উৎপাদনের ভুমিকাকে খতিয়ে দেখবে, যা কিনা এই অঞ্চলের পুঁজিবাদী কেন্দ্রগুলো থেকেই কাঠামো লাভ করেছে। বিশেষ মনোযগ দেওয়া হবে এই ক্রান্তিকালে সংস্কৃতি আর অর্থনীতির পরিবর্তিত সম্পর্কের ওপর এবং সেই সাথে শ্রমের নুতন উদ্ভূত ক্রিয়াপদ্ধতি আর আত্মমাত্রিকতার/আত্মমুখীনতার (subjectivity) সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার ওপর।

 

এই গবেষণা মূলত তিনটি শহর: সাংহাই (২০১০), কলকাতা (২০১১) এবং সিডনি (২০১২)-এর সৃষ্টিশীল শ্রমের অস্থিতিশীল গতিবিধির ওপর মনোনিবেশ করেছে। এই তিনটি শহরের প্রতিটিই এক একটি গবেষণামঞ্চের ক্ষেত্র, যা সমন্বিত করেছে অনলাইন (নেটভিত্তিক) এবং অফলাইন (নেটবিহীন) পদ্ধতিকে, যাতে শ্রম, গতিবিধি এবং  আত্মমুখীনতা/ আত্মমাত্রিকতার (subjectivity) মধ্যে বোধ ও বস্তুগত যোগসুত্রকে চেহারা দেওয়া যায়। বেইজিং (http://orgnets.net)-এ সংঘটিত পূর্বতন গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এই মঞ্চটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গবেষকদের জড়ো করেছে। সেই সাথে কর্মশালা, মাঠ পর্যায়ে গবেষণাকর্ম, আলোচনা-সেমিনার, প্রদর্শনী, মেইল তালিকা, ওয়েব সাইটের উপস্থাপন এবং প্রকাশনার প্রস্তুতি ইত্যাদির মাধ্যমে গবেষকদেরকে আঞ্চলিক অংশগ্রহনকারীদের সাথে একটি যৌথ কর্মক্ষেত্রে সংযুক্ত করেছে।

 

প্রকল্পটির মূল আগ্রহ শুধুমাত্র প্রতিটি স্বতন্ত্র শহরের শ্রম আর সংস্কৃতির রুপান্তরেই নয়, বরঞ্চ বর্তমান পৃথিবীতে আঞ্চলিক মাপকাঠির সুস্পষ্ট ভূমিকাকে স্বীকার করে এটি প্রক্রিয়াগত গুরুত্ব দিচ্ছে বিভিন্ন গবেষণাক্ষেত্রের আন্ত-উল্লেখ পদ্ধতির ওপর। এই ওয়েবসাইট হচ্ছে এই জাতীয় আন্ত-উল্লেখ পদ্ধতির একটি প্রধান গবেষনা যন্ত্র। সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর আত্ম-উল্লেখ কেন্দ্রিক জগতকে এড়িয়ে এই প্রকল্পটি একটি পরিবেশকে সৃষ্টি করেছে যেখানে যৌথ উদ্যোগে উদ্ভাবন আর জ্ঞানের উৎপাদন হতে পারে। এটি একই সাথে গবেষণামূলক কাজের একটি মুক্ত সংরক্ষণশালা, আবার সেগুলোকে সংগঠিত করবার একটি সক্রিয় মাধ্যম।

 

সৃষ্টিশীল শ্রম বলতে কেবলমাত্র সৃজনশীল আর সাংস্কৃতিক কর্মক্ষেত্রকে বোঝায় না। যেমনঃ সংগীত আর পরিবেশনামূলক কলা; চলচ্চিত্র, টেলিভিশন এবং রেডিও; সফ্ট ওয়্যার উন্নয়ন আর মাল্টি মিডিয়া; লেখালেখি, প্রকাশনা ও ছাপাই মাধ্যম; স্থাপত্যশিল্প, ডিজাইন ও দৃশ্যমাধ্যম। বরং এতে আরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নানা ধরনের সেবাপ্রদানকারী শ্রম যে গুলো সংযুক্ত থেকে এই ক্ষেত্রের কাজগুলোকে সচল রাখে। ‘অন্তর্বর্তী শ্রম’ প্রকল্পটি গবেষণার মাধ্যমে এই দুই ধরনের কর্মক্ষেত্রের মধ্যবর্তী সীমারেখাকে পরীক্ষা করে দেখছে।এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল সাংহাই, কলকাতা এবং সিডনির সৃষ্টিশীল শ্রম-পরিস্থিতিকে অনুসরণ করে সাম্প্রতিক অ্র্রর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের অঞ্চলগুলোর অবস্থানের বিন্যাসকে পুনর্বিবেচনা করা।

 

এমন একটি সময় যখন বাজারের অধিকার এলাকা-ভিত্তিক নাগরিকতার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, তখন জাতীয় সৃষ্টিশীল উদ্যোগের কার্যকারিতা আর কোনোভাবেই জাতীয় সীমান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না।এই প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করছে কীভাবে অ্র্রর্থনৈতিক,ভৌগোলিক এবং সামাজিক নমনীয়তার পরিবর্তিত প্রবণতাগুলো (শ্রম অভিপ্রয়াণসহ/Labour migration) এশীয় অঞ্চলে নতুন পরিচালনা কাঠামো ও চর্চার জন্ম দিচ্ছে। (একই সাথে এই রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কীভাবে আঞ্চলিকতাবাদ  নতুন ভাবে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে।) সীমান্তের ভূমিকাগুলোর ভেতরে যা রাজনৈতিক পরিসরকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করে আর যা সেই পরিসরের সীমান্তকে চিহ্নিত করে , উভয়ই, শ্রম, গতিবিধি আর আত্মমুখীনতার মধ্যবর্তী তাত্বিক ও ব্যবহারিক যোগসূত্রগুলোকে বোঝার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

 

অঞ্চল পর্যায়ে উত্থিত উত্পাদনী প্রশাসনগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে বোঝা সম্ভব কীভাবে তা বিভিন্ন এলাকার শ্রম-পরিস্থিতির অসমতাকে শোষণ করে থাকে।এ থেকে তৈরী হয় শ্রম-গতিবিধির ওপর আধিপত্যমূলক/ক্রমবিভক্ত সংগঠিত প্রশাসন যা বাজার, সীমান্ত এবং এলাকাভিত্তিক প্রযুক্তির সাহায্যে এই গতিবিধিকে সমন্বিত ও নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করে।সংযুক্তি আর গতিবিধির এই নানাবিধ সংগঠিত পদ্ধতিগুলোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও এই প্রকল্পের-ই একটি অংশ। যোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার, মেধা-সম্পদের পুনর্বিন্যাস, এবং জ্ঞান উত্পাদনের সঙ্কট-এর প্রেক্ষাপটে ‘অন্তর্বর্তী-শ্রম’ এই সব রূপান্তরকে খতিয়ে দেখবে যাতে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যত প্রবণতাসমূহকে সনাক্ত করা যায়।

 

Translation (English > Bengali) Meher Nigar

 

 

Mac Users: Instructions and Download for Bengali fonts